আগামী জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচন গুলোতে দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করতে যুব জমিয়তকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে

যুব জমিয়ত বাংলাদেশের সদস্য সম্মেলন ও জাতীয় কাউন্সিলে উপস্থিত কাউন্সিলরগণ ও সাংবাদিকবৃন্দকে মোবারকবাদ জানিয়ে মূল দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলেছেন:

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বপ্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী একটি রাজনৈতিক দল। এ দলটি ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুন ধারণ করে নৈতিকতার শিক্ষা ও রাজনৈতিক চর্চার একটি শক্তিশালী প্লাটফর্ম হিসেবে সুপরিচিত। একই সাথে দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামা-মাশায়েখ দ্বারা পরিচালিত ও ধর্মপ্রাণ মানুষ সমর্থিত এ দল নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখে সকল অন্যায়ের প্রতিবাদকারী একটি রাজনৈতিক দল। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ দেশের সাধারণ মানুষের সার্বিক কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। একটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল হিসেবে জমিয়ত অতীতের প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে এবং জনগণের সমর্থন পেয়েছে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ বর্তমানে কোন রাজনৈতিক জোটের অন্তর্ভুক্ত নয়, বরং দেশের জনসাধারণের কল্যাণে স্বতন্ত্র ভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। অতীতেও জমিয়তের নেতৃবৃন্দ জনগণের সমর্থনে বিজয়ী হয়ে জাতীয় সংসদে জনগণের পক্ষে এবং এলাকার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। সঙ্গত কারণে আমরা আশাবাদী: আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও
অংশগ্রহণমূলক হলে তাতে আমাদের অংশগ্রহণের ধারা অব্যাহত থাকবে ইনশা-আল্লাহ । 

সে লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় জমিয়তের বিগত জাতীয় কাউন্সিলে দলের সম্মানিত সভাপতি আল্লামা শায়খ যিয়া উদ্দীন সাহেবের প্রদত্ত ঘোষণার আলোকে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার সক্ষমতা অর্জনে এবং নির্বাচনের পূর্বপ্রস্তুতির অংশ হিসেবে আমরা সারা দেশে সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করেছি। ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়নে ইউনিয়নে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের কাজও দ্রুততার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে দলের সহযোগী সংগঠন যুব জমিয়ত বাংলাদেশ ও ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশও দেশব্যাপী একের পর এক সম্মেলন ও কাউন্সিল করে যাচ্ছে।তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এই সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল।

বর্তমানে আমাদের নেতাকর্মীগণ সাংগঠনিক ভাবে বেশ উজ্জীবিত ও ঐক্যবদ্ধ। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় নির্বাচন গুলোতে দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করতে যুব জমিয়ত বাংলাদেশকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কাজ করতে হবে।

আজ ১৩ অক্টোবর-২২ মঙ্গলবার সকালে রাজধানী ঢাকার মাহবুব আলী মিলনায়তনে মাওলানা তাফহীমুল হকের সভাপতিত্বে এবং মাওলানা ইসহাক কামাল ও মাওলানা রুহুল আমীন নগরীর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে জমিয়ত নেতৃবৃন্দ এ সব কথা বলেন। 

প্রধান অতিতি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় জমিয়তের সিনিয়র সহ-সভাপতি আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক,প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন জমিয়ত মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী। অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী,যুগ্মমহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মাওলানা মতিউর রহমান গাজিপুরী,সহকারী মহাসচিব মাওলানা জিয়াউল হক কাসেমী,সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী নাসীরুদ্দীন খান,মাওলানা তৈয়বুর রহমান চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন,শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুফতী জাবের কাসেমী,যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতী বশীরুল হাসান খাদিমানী,ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মুফতী মাহবুবুল আলম,মুফতী গোলাম মাওলা, মাওলানা হাবীবুল্লাহ মাহমূদ কাসেমী,মাওলানা মাহবুবুর রহমান,মাওলানা কবীর আহমদ,মাওলানা আব্দুল্লাহ আল বাক্বী,মাওলানা সাইফুদ্দীন ইউসুফ ফাহীম ও মাওলানা সুলাইমান মাদানী প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন:দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে গঠনমূলক সমালোচনা এবং অন্যায়ের প্রতিবাদ করার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। তাই জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ পারস্পরিক কাঁদা ছুড়াছুড়ি পরিহার করে মহান আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখে এবং  তাঁর হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রদর্শিত পথে ঈমানী দায়িত্ববোধ ও দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। সরকারের জনকল্যাণকর পদক্ষেপসমূহকে আমরা সাধুবাদ জানাই কিন্তু সরকারের কোন সিদ্ধান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের বিপক্ষে গেলে আমরা তার প্রতিবাদ অতীতেও করেছি এবং আগামীতেও করে যাব ইনশাআল্লাহ। আমরা আজও সরকারকে পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ করুন এবং দুর্নীতির মাধ্যমে বিদেশে পাচারকৃত টাকা অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে আনুন!

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ সর্বদা ইসলাম, দেশ ও মানবতার সেবায় নিবেদিত। করোনা মহামারি,সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোসহ সকল প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয়ে এদেশের জনগণ আমাদেরকে পাশে পেয়েছে এবং ভবিষ্যতেও পাবে ইনশাআল্লাহ।

সম্মেলনে মাওলানা তাফহীমুল হককে সভাপতি,মাওলানা ইসহাক কামালকে সাধারণ সম্পাদক ও চৌধুরী নাসীর আহমদকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে আগামী সেশনের জন্য ৬১ সদস্যবিশিষ্ট যুব জমিয়ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়।


Comments

Popular posts from this blog

আগামী ২৭ অক্টোবর ২২ইং বড়লেখা উপজেলা ছাত্র জমিয়তের উক্বাবে রাসুল সাঃ সম্মেলন ।

বড়লেখা উপজেলা ছাত্র জমিয়তের নব-নির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন।

২৭ শে অক্টোবর উক্বাবে রাসুল সাঃ সম্মেলন উপলক্ষে উপজেলা ব্যাপি দাওয়াতি সফর সম্পন্ন।