নারায়ে তাকবীর - আল্লাহু আকবার" স্লোগানটি মূলত মুসলমানদের ঈমানী চেতনার জাগান দিতেই ধ্বনিত হয়ে থাকে

আইয়ামে তাশরিক, ঈদের দিন তাকবীর ধ্বনি দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মুসলমানদের সমাবেশেও তাকবীর ধ্বনি দেয়া হয়। জেহাদের ময়দানে মনোবল বৃদ্ধি এবং আল্লাহর বড়ত্বের ঘোষণায় তাকবীর ধ্বনি দেয়া হয়। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে 'আল্লাহু আকবার' ধ্বনি বাধ্যতামূলক। নামাযের আহ্বান আযানও শুরু হয় 'আল্লাহু আকবারের' মাধ্যমে।

'আল্লাহু আকবার' ধ্বনি কর্ণকুহরে প্রবেশ করতেই মুমিনের শরীর শিহরিত হয়ে উঠে। ঈমানী জযবায় উদ্বেলিত হয় মুসলিমের দেহ-মন। জিন্দা হয় মুরদা দিল। জেহাদী জযবা, শাহাদাতের তামান্না বৃদ্ধি পায়। এক আল্লাহয় বিশ্বাসীদের বিশ্বাসকে সুদৃঢ় করে। 

হযরত ওমর রাযি.-এর ইসলাম গ্রহণের পর 'আল্লাহু আকবার' স্লোগানের মাধ্যমে মক্কার মুশরিকি সাম্রাজ্যের ভিত কাঁপিয়ে দেয়া হয়। হিজরত পরবর্তীতে মদীনার মুসলিমরা 'আল্লাহু আকবার' ধ্বনির মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বরণ করে নেন।

তাকবীর ধ্বনি কোনো ভূখণ্ড, কোনো অঞ্চল, কোনো সীমানা বা মানচিত্রের সাথে সীমাবদ্ধ নয়। অঞ্চলভিত্তিক কোনো জাতি-গোষ্ঠির জন্য নির্দিষ্ট নয়। কোনো সময়কালের জন্য নয়। এটা বিশ্বজনীন। বিশ্বের সর্বত্রই এ ধ্বনি সমস্বরে উচ্চারিত হয়। এর উপর বিধি-নিষেধ আরোপের অধিকার কারো নেই। 

তাকবীর ধ্বনি বজ্রকন্ঠে উচ্চারিত হয়েছিল কালাপানির আন্দামানে, মাল্টার দ্বীপে, উপমহাদেশের স্বাধীনতাকামী মুজাহিদদের কন্ঠে।

তাকবীর ধ্বনি জবরদখলকৃত বাইতুল মাকদিসে ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-যুবক ও শিশু-কিশোরদের বলিষ্ঠ কন্ঠে উচ্চারিত হয়, রক্তবিধৌত ফিলিস্তিনিদের মনোবল বাড়িয়ে দেয়,
হিন্দুত্ববাদী জঙ্গি হায়নাদের ঘেরাওয়ের মাঝে মুসলিম কিশোরী মুসকানের হৃদয়ের গহীন থেকে উচ্চকণ্ঠিত হয়, 
ধ্বনি-প্রতিধ্বনিত হয় বিশ্বের বর্বরতম কারাগার গোয়ান্তানামায়।

'আল্লাহু আকবার' ধ্বনিত হয় আরবের মরু প্রান্তরে, আফ্রিকার গহীন জঙ্গলে, 
উত্তর মেরুর বরফে ঢাকা গ্রামে, 
কাশ্মীরে মজলুমানের কন্ঠে, 
আফগানের সুউচ্চ পাহাড়ে, পর্বত গুহায়, দুনিয়াভোলা মুজাহিদের কন্ঠে, 
উদ্বাস্তু আরাকানিদের দীপ্ত কন্ঠে, 
সবুজ-শ্যামল বাংলায় ঈমানী চেতনায় উজ্জীবিতদের দরাজ কন্ঠে।

তাকবীর ধ্বনি ইসলাম দুশমনদের হৃদয়ে শ্যালের ন্যায় বিদ্ধ হয়। মিজাইলের আঘাতের চেয়েও অধিক ক্ষতের সৃষ্টি করে। ব্রাক্ষ্যবাদীদের দোসরদের হৃদকম্পন সৃষ্টি হয়। সাম্রাজ্যবাদীদের করুণার ভিখারীদের মুখ ফ্যাকাসে হয়ে উঠে। তাবেদাররা চোখে-মুখে সর্ষে ফুল দেখতে পায়।

'আল্লাহু আকবার' স্লোগানে এত জ্বালা কেন? এত মাথা ব্যাথা কেন? এত বিরোধীতা কেন? পত্রিকার পাতায়, টিভির পর্দায় এত সমালোচনা কেন?

তাকবীর ধ্বনি কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। কোনো গোষ্ঠীর নয়। এ ধ্বনি তাওহিদে বিশ্বাসী সকলের। বিশ্বের সকল মুসলিমের।

আসুন! প্রতিটি সম্মেলন-সমাবেশ, ওয়াজ-মাহফিল, সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে 'আল্লাহু আকবার' ধ্বনির মাধ্যমে স্রষ্টার শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণা দেয়ার দৃপ্ত শপথ গ্রহণ করি।

নারায়ে তাকবীর - আল্লাহু আকবার
নারায়ে তাকবীর - আল্লাহু আকবার 
নারায়ে তাকবীর - আল্লাহু আকবার



Comments

Popular posts from this blog

আগামী ২৭ অক্টোবর ২২ইং বড়লেখা উপজেলা ছাত্র জমিয়তের উক্বাবে রাসুল সাঃ সম্মেলন ।

বড়লেখা উপজেলা ছাত্র জমিয়তের নব-নির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন।

২৭ শে অক্টোবর উক্বাবে রাসুল সাঃ সম্মেলন উপলক্ষে উপজেলা ব্যাপি দাওয়াতি সফর সম্পন্ন।